অধ্যক্ষ

অধ্যক্ষের বাণী

রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের তালিকায় পচামাড়িয়া ডিগ্রী কলেজ একটি বিশেষ পরিচিত নাম। ২১ বছর আগে ১লা জানুয়ারী ১৯৯৪ সালে শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের পচামাড়িয়া গ্রামের চিরস্মরণীয় ক্ষণজন্মা সর্বজন শ্রদ্ধেয় মহাপ্রাণ নেতা মরহুম ডাঃ সদর উদ্দিন আহম্মেদের আহবানে উপজেলার তৃতীয় এ কলেজটির গোড়া পত্তন হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদে স্থাপিত এ কলেজটি মানব সম্পদ উন্নয়ন ও মেধা বিকাশে বিশেষভাবে নারী শিক্ষার উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সুযোগ ও সৌভাগ্য যে, প্রতিষ্ঠানটির জন্মলগ্ন থেকে অদ্যাবধি আমি প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসাবে এর কর্ম প্রচেষ্টার সাথে সংযুক্ত থাকতে পেরেছি।পচামাড়িয়া ডিগ্রী কলেজ এখন রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলাধীন উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে অন্যতম। কলেজটি জেলা সদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার এবং উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে দেশের বৃহত্তম যমুনার নদীর শাখা বারনই নদীর পাদদেশে পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রাণকেন্দ্রে পচামাড়িয়া গ্রামে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিমন্ডলে গড়ে উঠেছে। পচামাড়িয়া গ্রামটি অতিথি পাখির/বিদেশীর পাখির গ্রাম হিসাবে সর্বাধিক পরিচিত ও সমাদৃত। আবার পচামাড়িয়া কে পাখির স্বর্গরাজ্যও বলা হয়ে থাকে। হয়তবা কোন এক সময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার পশ্চাৎ পদতার/কর্দমাক্ততার কারণে গ্রামটির নাম “পচামাড়িয়া” হিসাবে পরিচিতি লাভ করলেও বর্তমানে জেলা ও উপজেলা সদরের সাথে রয়েছে পাকা সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।
বর্তমানে অত্র কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, এইচ.এস.সি-ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও স্নাতক(পাস) পর্যায় মিলে প্রায় ১,০০০-১,১০০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এখানে শিক্ষাদানের জন্য উচ্চজ্ঞান সম্পন্ন ও দক্ষ শিক্ষকমন্ডলী নিয়োজিত রয়েছেন এবং তাঁরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন। যার কারণে কলেজের শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি ও ফলাফল উল্লেখ করার মতো। কলেজের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায়; এইচ.এস.সি-ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখায় এবং স্নাতক(পাস) কোর্সের বি.এ, বি.এস.এস ও বি.বি.এস শাখায় সর্বশেষ নতুন নতুন বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। আমাদের রয়েছে সবুজ গাছপালা ও শোভাবর্ধনকারী ফুলবাগান বেষ্টিত মনোরম ও দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক কলেজ ক্যাম্পাস, ছাত্রদের একটি হোষ্টেল, ২২৪০ বর্গফুটের অডিও সাউন্ড সিষ্টেম সমৃদ্ধ অডিটোরিয়াম । এখানকার পরিবেশগত ও ভৌগলিক অবস্থান অত্যন্ত মনোরম ও শিক্ষা বান্ধব- যেখানে নিশ্চিন্তে শিক্ষা গ্রহণ করা যায়। পচামাড়িয়া ডিগ্রী কলেজটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বোলপুরে অবস্থিত নোবেল বিজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর সৃষ্টি “শান্তি নিকেতনের” আদলে তৈরী। পচামাড়িয়া ডিগ্রী কলেজ ক্যাম্পাসটি এখন আর কেবলমাত্র শিক্ষা দানের একক অভিন্ন লক্ষ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, এটি এখন গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষের “চিত্তবিনোদন কেন্দ্রে” ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের “মুক্ত পাঠশালায়” পরিণত হয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত শিক্ষার প্রকৃত উৎকর্ষ সাধনের প্রচেষ্টাচালিয়ে যাচ্ছি। সমাজের প্রত্যেক ক্ষেত্রে “ডিজিটাল বাংলাদেশের” স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নের শীর্ষৈ পৌঁছার লক্ষ্যে সরকারী দৃঢ় প্রত্যয় থেকে আমি বর্তমান সরকারের তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় রোডম্যাপে সামিল হতে চলেছি। পচামাড়িয়া ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত কোন ওয়েব সাইট চালু ছিল না। বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষতা সম্পর্কে জানা, শোনা ও উপলব্ধির মধ্যেমে কলেজ কে সরকারে উন্নয়নের রোডম্যাপে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে আমি শিক্ষাবান্ধব ও দায়িত্বশীল কলেজ গভর্নিং বডির আন্তরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কলেজে ১লা জুলাই ২০১৫ইং তারিখ থেকে ওয়েব সাইট খোলার কার্যক্রম শুরু করেছি। আমি বিশ্বাস করি, ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এক টেবিল থেকেই কলেজ সম্বন্ধে সকল তথ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে এবং এটা কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকমন্ডলীসহ তথ্য সংগ্রহে আগ্রহী সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করবে।
বর্তমানে আমরা পাঠদানের মান উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমান সদাশয় সরকারের শুভ দৃষ্টিভঙ্গী, দিক নির্দেশনা ও সহযোগিতার ফলে আমরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ০৮টি ডেক্সটপ ও ০২ টি ল্যাপটপ কমিম্পিউটার সমৃদ্ধ সুসজ্জিত কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন, প্রগতিশীল শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন উদ্ভূদ্ধকরণ এবং শিক্ষা উপকরণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি এবং আমরা ডিজিটাল যুগে পদার্পনের লক্ষ্যে অবাধ তথ্য প্রবাহে প্রবেশের দ্বার উন্মুক্ত করার জন্য নেট-ওয়ার্ক সিষ্টেম চালু করতে যাচ্ছি। ই-লার্নিং সিষ্টেম চালুর লক্ষ্যে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অচিরেই পচামাড়িয়া ডিগ্রী কলেজে সকলের জন্য উন্মুক্ত “ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন” স্থাপন করা হবে।
খেলাধুলা, সঙ্গীত, শিক্ষা সফর, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের সমন্বয়ে দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শরীরচর্চা শিক্ষকের মাধ্যমে কলেজে সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে উদ্ভূদ্ধ করা লক্ষ্যে আমরা আন্তরিকভাবে প্রচেষ্ঠা চালিয়ে চাচ্ছি, যেন তাদের মেধা ও মননশীলতার যথাযথ বিকাশ ঘটে। তাছাড়া আমরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে লাইব্রেরী পাঠকক্ষ ব্যবহারের জন্যও উদ্ভূদ্ধ করছি এবং বিভিন্ন আগ্রহীর প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে আমরা সম্বৃদ্ধ লাইব্রেরী গড়ে তুলেছি। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পচামাড়িয়া ডিগ্রী কলেজের এ উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
কোনরূপ দ্বিধা-দন্দ্ব ও সংকোচ ছাড়াই ঐ সকল ব্যক্তিবর্গের প্রতি আমি আমার গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি, যাঁরা এ কলেজ প্রতিষ্ঠার এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। আমি আশা করি এ কলেজটি তার আপন গৌরবময় অর্জন এবং সমাজ ও জাতি বিনির্মানে তার অবদানের জন্য অধিক কার্যকর ভূমিকা পালনের মাধ্যমে স্বমহিমায় এগিয়ে যাবে। সকলকে ধন্যবাদ।
৩০/০৭/২০১৫

বিষ্ণু পদ সাহা
অধ্যক্ষ
পচামাড়িয়া ডিগ্রী কলেজ
পচামাড়িয়া, পুঠিয়া, রাজশাহী-৬২৬০
মোবাইল নং ০১৭১৫-০০৮৩৫১; ই-মেইল নং [email protected]